বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০২৫ - ১৪:২৩

বিশেষ সাক্ষাত্কার:

আন্তর্জাতিক মোবাল্লিগ হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা জয়নুল আবেদিন সাহেব।

প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম, মাওলানা সাহেব। আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাই আমাদের সঙ্গে সময় দেওয়ার জন্য।

মাওলানা জয়নুল আবেদিন: ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমি ধন্য যে আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছি।

প্রশ্ন: আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় ইসলামোফোবিয়া এবং এর বিরুদ্ধে আরবাঈনের বার্তা। প্রথমেই জানতে চাই, আপনি ইসলামোফোবিয়াকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

মাওলানা জয়নুল আবেদিন: ইসলামোফোবিয়া মূলত একটি ভীতি, ঘৃণা ও ভুল বোঝাবুঝি—যা ইসলামের প্রতি এবং মুসলমানদের প্রতি পশ্চিমা গণমাধ্যম ও রাজনীতির কারণে গড়ে উঠেছে। এটি এক ধরণের মানসিক ও সামাজিক রোগ, যেখানে ইসলামকে সহিংসতা, উগ্রতা কিংবা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলা হয়। অথচ ইসলাম মানে শান্তি, ন্যায়, এবং মানবতার পূর্ণতা।

প্রশ্ন: একদম ঠিক বলেছেন। তাহলে, এই প্রেক্ষাপটে আরবাঈন কীভাবে একটি শান্তির বার্তা হতে পারে?

মাওলানা জয়নুল আবেদিন: আরবাঈন শুধু একটি শোকানুষ্ঠান নয়, বরং এটি একটি বৈশ্বিক মানবিক আন্দোলন। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদাতের স্মরণে লাখ লাখ মানুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে, কারবালার পথে হেঁটে একত্রিত হন। তারা কেউ অস্ত্র হাতে নেন না, বরং খাদ্য, পানি, আশ্রয় দিয়ে অন্যদেরকে সেবা করেন। এই যে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও সহমর্মিতা—এটাই ইসলামের আসল চিত্র।

প্রশ্ন: কিন্তু পশ্চিমা মিডিয়ায় তো প্রায়ই ইসলামকে সন্ত্রাসের ধর্ম হিসেবে তুলে ধরা হয়। তখন আমাদের করণীয় কী?

মাওলানা জয়নুল আবেদিন: আমাদের করণীয় হলো, ইসলামের প্রকৃত বার্তাটি কর্মের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া। আমাদের জীবনযাপন, সহানুভূতি, এবং মানবিক আচরণই হোক উত্তর। যখন একজন অমুসলিম দেখবে যে একজন মুসলমান সত্যবাদী, সহিষ্ণু, সদয়—তখনই ইসলামের প্রকৃত রূপ তার সামনে উদ্ভাসিত হবে। আরবাঈন তারই একটি মাইলফলক—যেখানে মুসলমানরা বিশ্বকে দেখিয়ে দেন, ইসলাম কারবালার চেতনায় শিখিয়ে দেয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে এবং মজলুমের পাশে থাকতে।

প্রশ্ন: খুব সুন্দর করে বললেন। তাহলে আপনি কী মনে করেন, মুসলিম যুবকদের এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার কী ভূমিকা থাকতে পারে?

মাওলানা জয়নুল আবেদিন: মুসলিম যুবকরাই ভবিষ্যতের প্রতিনিধি। তারা যদি আরবাঈনের ইতিহাস, আত্মত্যাগ, এবং মূল্যবোধ নিজেদের মধ্যে ধারণ করে এবং শান্তি, ন্যায় ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়—তবে ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে একটি বাস্তব প্রতিরোধ গড়ে উঠবে।

প্রশ্ন: আপনার মূল্যবান কথা আমাদের শ্রোতা ও পাঠকদের চোখ খুলে দেবে, ইনশাআল্লাহ। সাক্ষাৎকারে অংশ নেওয়ার জন্য আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ।

মাওলানা জয়নুল আবেদিন: জাযাকুমুল্লাহ খাইরান। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হক বুঝে তাতে চলার তাওফিক দিন। ওয়াসসালামু আলাইকুম।

সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মজিদুল ইসলাম শাহ 

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha